Monday, April 11, 2022

কাউনিয়ায় দেড় বছরেও শেষ হয়নি পাকা রাস্তা নির্মাণ, গাইড ওয়ালে ধস!

 


নিজস্ব প্রতিবেদক 
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের তকিপল হাট থেকে গোপীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে ব্রেন্টের বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন পাকা রাস্তা দেড় বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। এরই মধ্যে রাস্তার রক্ষা কবজ হিসেবে নবনির্মিত প্রায় চারশো মিটার গাইড় ওয়াল ধসে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালে। রাস্তা খুঁড়ে দুধারে মাটি রাখায় চৈত্রের অকাল বৃষ্টির জমানো কাঁদাপানিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। সামান্য বৃষ্টিতে যানবাহন চলাচলে রাস্তাটি পুরোপুরি অনুপযোগী হওয়ায় জনদূর্ভোগ চরমে উঠেছে। বালাপাড়া ও শহীদবাগ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ এ পাকা রাস্তা নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও এ যেন দেখার কেউ নেই!

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, অবকাঠামোগত দক্ষতা ও তথ্যের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্প (প্রভাতী) এর আওতায় ২০২০/২১ অর্থবছরে ১৮৫৪২৪০৬০ নং আইডি ভুক্ত এ রাস্তার প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৬১ হাজার ১৫৭ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনথিয়া-ঐশী এন্ড জেসমিন এতে চুক্তিবদ্ধ হয়। গত বছর ৭ জানুয়ারী ২ দশমিক ৭৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ পাকা রাস্তা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন সংশ্লিষ্টরা। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই বছরেই ৪ এপ্রিল এর মধ্যে রাস্তা নির্মাণ সম্পন্ন করার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, অজানা কারণে দীর্ঘ সময় যাবৎ এই রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে পানি জমে রাস্তাটিতে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রাণনাথচর গ্রামের ইউনুস আলী বলেন, এ রাস্তা দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যায়না। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অথচ দেখার কেউ নেই! অটো চালক আশিক বাবু জানান, রাস্তার এই দুরাবস্থার কারণে অনেক দূর ঘুরে তাদের চলাচল করতে হয়। কারণ নরম মাটি আর খানাখন্দের জন্যে প্রায় প্রতিদিন ছোটখাটো দূর্ঘটনা ঘটছে। একই অভিব্যক্তি অনেকেই।

উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, রাস্তার সীমানায় কিছু গাছ থাকায় এবং বন বিভাগের গাছ কাটার টেন্ডার না হওয়ায় এমন দেরি হচ্ছে। আর গাইড ওয়াল ধসে পরার কারণ হিসেবে রাস্তা ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননকে দায়ী করেন এ কর্মকর্তা। পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব এ কথা নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে খাল খনন করেছি। তারা যদি রাস্তার সীমানা চিহ্নিত না করে ভরাট খালে গাইড ওয়াল দেয়, তাহলে তো এমনটা ঘটবেই। উপজেলা বন কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী জানান, বন বিভাগের গাছ না কাটার কারণে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ আছে এমন কথা জানা নেই তার। উল্লেখিত রাস্তায় বন বিভাগের ৩৮টি গাছ কাটার রেজুলেশনকৃত অনুমোদন হয়েছে।

জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট  এবং গুরুত্বপূর্ণ এই পাকা রাস্তা নির্মান নিয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণের এমন পাল্টাপাল্টি দোষারোপে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

-এমআর

No comments:

Post a Comment