কাউনিয়া রেল স্টেশন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীদের বহিঃগমন ও গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। সেসব কাজে ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। কাজ চলাবস্থায় সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, যেখানে যে পরিমাণে পাথর বালি এবং সিমেন্ট দেওয়ার কথা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা সে পরিমান সিমেন্ট না দিয়ে তার চেয়ে অধিক বালি এবং মানহীন ইট পাথর ব্যবহারের পাশাপাশি ভিটি বালুর পরিবর্তে কাচা মাটি ব্যবহার করছেন। এছাড়া প্লাটফর্মের সলিংয়ে ঢালাইয়ের সাথে যে পরিমান রড ব্যবহার করার কথা তাতেও রয়েছে অনিয়ম। সলিংয়ে যেসব ইট বিছানো হয়েছে সেসব ইটগুলোও নিম্নমানের।
স্থানীয় বাসিন্দা আতিয়ার রহমান, আলী আকবর হালিম ও অরেঞ্জ মিয়া বলেন, কাউনিয়া রেলওয়ে জংশনে অত্যাধুনিক রেল স্টেশনের বহিঃগমন প্লাটফর্ম নির্মানাধীন কাজে নিম্নমানের ইট-পাথর, বালি এবং কম সিমেন্ট দিয়ে করা হচ্ছে টার্মিনালের ঢালাই কাজ এবং ঢালাইয়ের সময় রেলের কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উপস্থিত থাকেন না। এই ধরনের অনিয়ম দেখে এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার অভিযোগ দিলেও কাজ না হওয়ায় পরে একত্রিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে কাউনিয়া রেল স্টেশন মাস্টার মো. হুসনে মোবারককে অবহিত করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার মো. হুসনে মোবারক জানান, শুনেছি প্রায় সাড়ে ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাজ হচ্ছে। স্টেশনের এই কাজের দায়িত্বে রেলওয়ের লালমনিরহাট আইডব্লিউবি দেখাশোনা করেন। কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বা কিভাবে করবে এসব তথ্য আমার জানা নেই। তারা কাজ সম্পন্ন করে আমাদের কাছে হ্যান্ডওয়ার করলে তখন আমরা দেখভাল করবো। এছাড়া কারা কাজ করছেন, কি করছেন তা দেখার দায়িত্ব সম্পন্ন আলাদা ডিপার্টমেন্টের এ ব্যাপারে আপনারা রেলওয়ের লালমনিরহাট জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট জোনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন-উর-রশিদ জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। স্টিমেট অনুযায়ী কাজ না হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তার কাছে কাজের স্টিমেট ও তথ্য চাইলে তিনি তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন উপরের মানা আছে স্টিমেট দেওয়া যাবে না।
রেলওয়ে লালমনিরহাট জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব জানান, ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স সোহানা এন্টারপ্রাইজ কাজটি করছে। স্টিমেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে এই কাজের বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে তা আমাদের কাছে জানালে আমরা বিষয়টি দেখবো। পাশাপাশি ঢালাইকৃত স্লাবগুলো ল্যাব দিয়ে পরীক্ষা করার পরেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফাইনাল বিল দেওয়া হবে।
এ দিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বাবু মিয়া জানান, স্টিমেট অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমাদের মালিক রেল মন্ত্রীর ভাতিজা হয় এ বিষয়ে নিউজ করে কোন লাভ হবে না।
এমআর
No comments:
Post a Comment