মিজানুর রহমান
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ’৭১-র বিষাদময় স্মৃতি আজও বহন করছে শহীদবাগ ইউনিয়নের বধ্যভুমি ঘুঁঘুঁরথান। ১৯৭১ পর কাউনিয়ার কুর্শা ও বালাপাড়া ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে নতুন একটি ইউনিয়ন গঠন করা হয়। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদের স্মরণে ওই ইউনিয়নের নাম দেয়া হয় শহীদবাগ। বছর কয়েক আগেও এ বধ্যভুমিটি অরক্ষিত থাকলেও বর্তমান সরকারের আমলে সেটি এখন সুরক্ষিত। ফলে ওই এলাকার বর্তমান প্রজন্ম শহীদবাগের এ শহীদ স্মৃতি নিয়ে এখন তারা গর্বিত। সে সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী
সুদর্শন বর্ম্মন দয়াল জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন
’৭১-র এপ্রিলে কাউনিয়ার সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের শপথ নিয়ে কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে। ওই সময় পাক-সেনারা বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিশ্বর মৌজায় মা-বোনদের উপর অত্যাচার শুরু করলে উত্তেজিত জনতা প্রাণের মায়া ত্যাগ করে দা, কুড়াল, বটি দিয়ে কুপিয়ে পাক-সেনাদের হত্যা করে লাশ গুম করে। এ ঘটনায় পাক-বাহিনীর নর হায়েনারা তাদের লাশ না পেয়ে ভূতছাড়া মৌজার জুড়াবান্দা বিলে এবং রেল লাইনের ধারে শতাধিক নিরীহ নারী-পুরুষ, তরুন-তরুনী ও শিশুদের নির্বিশেষে গুলি করে। এ সময় তারা ওই এলাকার সবগুলো বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়, আবার অনেক শহীদদের লাশ সেই আগুনে পুড়ে ফেলে। তিনি বলেন, ওই দিন পাক-সেনারা এতটাই হিংস্র ছিলো যে তারা জনৈক হাজ্বী সাহেবকে ট্রেনে গুলি করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ওই দিন ভূতছাড়া গ্রামে একসাথে শতশত মানুষকে হত্যা করার প্রক্ষিতে স্বাধীনতার পর সে সব শহীদদের স্মৃতি স্মরণে এখানে নতুন করে একটি ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয় শহীদবাগ। সেই শহীদবাগ ইউনিয়নেই অবস্থিত ঘুঁঘুঁরথান বধ্যভুমি।
No comments:
Post a Comment