নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘কীসের লকডাউন বাহে! প্যাট (পেট) কী লকডাউন মানে। একটাদিন কাম (কাজ) না করলে বউ-ছাওয়া নিয়া উপাস থাকা নাগে, হামার গুলার কথা কায়ও ভাবে না। এ্যলা ফির দুপরাতে সোউগ দোকান বন্ধ হয়, কাম শ্যাষ করি আসিয়া খরচাপাতি করাও মুশকিল হইছে। তাতে ফির রোজা, তোমরায় কন এইদ্যান করি কী জীবন চলে? আল্লাহ যদি করোনা দিয়া মারে মারুক, প্যাটের ভোকে (ক্ষুধায়) মইরবার চাই না বাহে!’
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা সদরের হরিশ্বর গ্রামের দিনমজুর পঞ্চাশর্ধ আয়নাল হক তার আঞ্চলিক বচনে হতাশ কন্ঠে কথা গুলো বলেন। একই অভিব্যক্তি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি, কৃষক-শ্রমিক, রিক্সাওয়ালাসহ করোনার ছোবলে বিপাকে পড়া নানা শ্রেণীপেশার খেটে খাওয়া দুঃস্থ মানুষ গুলো।
কাউনিয়ার সাধারণ মানুষের মাঝে প্রথমবার করোনাতঙ্ক দেখা গেলেও এবারে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সর্বাত্মক লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। দেখা গেছে, উপজেলার সড়ক গুলোতে দাপিয়ে চলছে ব্যক্তিগত মোটরযান ও চার্জাররিক্সা। হাট-বাজার গুলোতে চুপিসারে খোলা রয়েছে দোকানপাট। তাদের নেই সামাজিক দুরত্বের বালাই। ভুলে গেছেন তারা হাত ধোঁয়া। প্রায়ইজনে মাস্ক থাকে পকেট কিংবা থুতনি জুঁড়ে।
উপজেলায় আগেরবার সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে করোনা কালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঢাঁকঢোল পিটিয়ে হরেক কর্মকান্ড দেখা গেলেও এবারে তেমন দৃর্শ্যমান হয়নি। তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের বিধিনিষেধ মানতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে চালিয়ে যাচ্ছে সচেতনতামুলক প্রচারণা ও ভ্রাম্যমান অভিযান। তাদের উপস্থিতি আর মুহুর্তেই জনশুণ্য নিস্তব্ধতাকে জানান দেয় এ যেন চোর-পুলিশ খেলা।
সুশীল সমাজ বলছেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা মোকাবিলায় জনসচেতনতাই শ্রেয়। তবেই, করোনার ভয়াবহতা কতই বা স্মৃতি রোমন্থন করবে তারা।
-এমআর
No comments:
Post a Comment