Sunday, August 21, 2022

২১ আগষ্ট ট্রাজেডি : হত্যাকারীদের ফাঁসির অপেক্ষায় রেজিয়ার স্বজনরা


মিজানুর রহমান, কাউনিয়া (রংপুর
গ্রেনেট হামলায় নিহত রেজিয়ার হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারেনি তার বাবা-মা। দীর্ঘ দেড় যুগ পেরিয়ে গেলেও ঘাতকদের বিচার কার্যকর না হওয়ায় আজও কাঁদে নিহত রেজিয়ার সন্তানরা। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেট হামলায় নিহত হন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানারায়ণ গ্রামের রেজিয়া বেগম (৪০) তার বাবার নাম আফাজ উদ্দিন। রেজিয়া নিহত হওয়ার খবর শুনে তার মা আমেনা বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে দুই বছর পরই মারা যান। আর বাবার মৃত্যু হয়েছে ২০১৪ সালে। এখনও মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির অপেক্ষায় রেজিয়ার দুই ছেলে হারুন মিয়া প্রতিবন্ধী নুরুন্নবী প্রহর গুনছে।

রেজিয়ার পরিবার সুত্রে জানা গেছে, স্বামী আব্দুল খালেকের মৃত্যুর পর রেজিয়া বেগম জীবিকার তাগিদে শশুড়-শাশুড়িসহ সন্তানদের নিয়ে ১৯৯০ সালে ঢাকা পাড়ি জমান। হাজারীবাগে বাড্ডায় পানির ট্যাঙ্কের কাছে থাকতেন। ওই এলাকাতেই ইন্ডিয়ান ভিসা অফিসে ছবি লাগানোর কাজ করতেন তিনি। ওই সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও জড়িয়ে পড়েন। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অন্যদের মতো রেজিয়া বেগমও সভানেত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শুনতে গিয়েছিলেন। জনসভায় সেদিনের ভয়াবহ গ্রেনেট হামলায় রেজিয়া বেগম ঘটনাস্থলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

বিগত ১৮ বছরেও বিচারের রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশ রেজিয়ার স্বজনরা। বড় ছেলে হারুন মিয়া জানান, মা হারিয়ে দিশেহারা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যায়ক্রমে ৩২ লাখ টাকা দিয়ে আমাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এতে আমরা অনেকটা সচ্ছল হয়েছি। ছোট ছেলে নুরুন্নবী বলেন, মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর প্রথম দু-এক বছর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটা করে পালন করলেও এখন আর স্মরণ করেন না। নিজেদের সাধ্য মতো মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিলাদ মাহফিল দোয়ার আয়োজন করেন। এতো বছর পেরিয়ে গেলেও মায়ের হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন না হওয়ায় তারা ক্ষুদ্ধ। অবিলম্বে ২১ আগষ্ট গ্রেনেট হামলাকারীদের বিচারের রায় কার্যকরের দাবী তাদের।

গ্রেনেড হামলায় নিহত রেজিয়া বেগমের পরিবারের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানী কমান্ডার সরদার আব্দুল হাকিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পরিবারটির প্রতি সব সময় সদয় দৃষ্টি রেখেছেন। আমরাও দলের পক্ষ থেকে পরিবারটির খোঁজ-খবর রাখছি।

No comments:

Post a Comment