Saturday, December 30, 2023

বাঁশের সাঁকোই ভরসা


নিজস্ব প্রতিবেদক 
রংপুরের কাউয়িায় উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নে পূর্ব নাজিরদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মরা তিস্তা নদীর উপরে সেতু না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। বর্ষা কালে ছোট নৌকায় নদী পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে কয়েকবার। দুর্ভোগ লাগবে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।

প্রায় ১০ বছর আগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি করেন বাশেঁর সাঁকো। সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে বাঁশ-কাঠ অর্থ সংগ্রহ করে মেরামত করে যাতায়াতের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু বৃষ্টি বন্যার কারণে সাঁকোটি অতি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে প্রতিবছরই মেরামত করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

এদিকে ২০২১ সালে হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে প্রায় লাখ টাকা ব্যয়ে পাশেই আরেকটি ব্রীজ তৈরীর জন্য ইট সিমেন্টের সিড়ি অ্যাঙ্গেল দিয়ে ব্রীজের অবকাঠামো তৈরি করে রেখে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্রীজটির কাজ শেষ না হওয়ায় আগের বাঁশের সাঁকোটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন ব্রীজ না হওয়ার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হারাগাছের চরাঞ্চলের গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভাসহ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা নদীটি। নৌকা আর বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর ভরসা। ভোটের আগে জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি বলছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফ হোসেন গাজিয়ার রহমান জানান, নদীর ওপারে ২টি বাজার, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২টি মাদ্রসা রয়েছে। সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষ স্কুল পড়ুয়া শিশুদের যাতায়তে চরম বিপাকে পরতে হয়। খলিলুর রহমান জানান, সেতু না থাকায় পাশর্^বর্তী চিনাতুলি, ঠিকানার হাট, পূর্ব নাজিরদহ, বল্লভবিষূ গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্থ লক্ষ মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়তে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

গ্রাম গুলোতে আলু, ভুট্রা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদামসহ নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয় অথচ পূর্ব নাজিরদহ ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ হলে অর্ধেক পথ কমে আসবে, সেই সাথে এলাকার কৃষকরা পাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য।

পূর্ব নাজিরদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া জানান, সেতু না থাকায় স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করতে হয়। বিদ্যালয়গামী ছাত্র- ছাত্রীরা জানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে যেতে তাদের খুব কষ্ট হয়। সবাই বলে নতুন সাঁকো হবে কিন্তু হয় না! আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না।

বিষয়ে হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রাজু আহমেদ জানান, ব্রীজটির ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ আগামী এক মাসের মধ্যেই শেষ করবো। ইউনিয়ন পরিষদের অর্থ সংকটের কারণে কাজটি সঠিক সময়ে করতে পারি নাই। আশা করছি নতুন বছরেই ব্রীজটি উদ্বোধন করতে পারবো। ব্রীজটির কাজ শেষ হলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এর সুফল পাবেন।

এমআর

No comments:

Post a Comment