Wednesday, August 27, 2025

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগ, টাকা দিলে নম্বর মিলে


নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে রংপুরের কাউনিয়ায় চলতি বছরের এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেন্দ্র শিক্ষকদের টাকা না দিলে পরীক্ষায় পাস নম্বর মিলবে না বলা হয়েছে। স্বনামধন্য শিক্ষালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করে পকেটে টাকা ভরছেন অসাধু শিক্ষকরা। এ যেন নিরব চাঁদা আর টাকা নেওয়ার মহোৎসব দেখার কেউ নেই! 

সরজমিন ঘুরে উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে দুইশো থেকে তিনশো টাকা হারে প্রত্যেকের কাছে ছয়শো থেকে এক হাজার টাকা বা তার অধিক টাকা নেওয়ার সত্যতা মিলেছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে অকপটে স্বীকারও করেছেন কেন্দ্র সচিব ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। প্রকাশ্য আদায়কৃত এ টাকার জন্য কোনো রশিদ দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় বইছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে। 

পরীক্ষার্থীরা জানান, ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরুর আগেই তাদের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ে দুইশো টাকা করে আদায় করেছেন। টাকা না দিলে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর কম দিবেন সেই কারণে বাধ্য হয়েছেন তারা। একই অভিব্যক্তি কেন্দ্রগুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সকল পরীক্ষার্থী। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া কলেজ কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ মো. ফারুক আজম বলেন, এটা বছরের পর বছর হয়ে আসছে তবে আগামী বছর থেকে এ কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষায় কোনো টাকা নেওয়া হবে না। কাউনিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্র সচিব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কেন্দ্র পরিদর্শকসহ পরীক্ষা গ্রহণের বিভিন্ন ব্যয় আছে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে দুইশো টাকা করে তুলে সেগুলো বহন করতে হয়। মীরবাগ কলেজ কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার কোনো টাকা নেওয়া হয়নি ব্যবহারিক খাতা বাবদ দেড়শো টাকা করে নেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোছা. দিল আফরোজ জানান, ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা আদায়ের সুযোগ নেই। এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক বিষয়টি শুনলেও মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর রংপুরের সহকারী পরিচালক (কলেজ) মো. সাদাকাত হোসেন জানান, এমপিওভুক্ত কলেজ পরিপত্রের বাহিরে কোনো টাকা নিতে পারবেনা। রশিদ ছাড়া টাকা আদায় করা নিয়ম বহির্ভূত। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার খরচ ফরম পূরণের সময়েই নেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এবারে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উপজেলার কলেজ, মাদরাসা ও বিএম শাখা মিলে ২০৩০ জন পরীক্ষার্থী ৫টি কেন্দ্র থেকে অংশ নিয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কেন্দ্রগুলোর সচিবসহজড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবি করেছেন স্থানীয়রা। 

এমআর

No comments:

Post a Comment