হাট বাজার গুলোতে উন্নত মানের সেলুন গড়ে উঠায় এবং আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ায় পিড়িঁতে বসে মানুষ আর চুল-দাড়ি কাটতে চায় না। এছাড়া সেলুন গুলোতে হরেক রকম প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে বহুকালের ঐতিহ্যগত চুলকাটার কারিগরদের খুব কমই দেখা মিলে হাটে-ঘাটে গ্রামাঞ্চলে। অনেকেই পিড়িঁতে বসে চুল কাটতে লজ্জাবোধ করেন। কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত প্রায় পিড়িঁতে বসে চুলকাটা।
সরজমিনে উপজেলার তকিপল হাটে কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ নরসুন্দরের সাথে কথা হয়। তারা বলছেন, এখন আর আগের মতো হাটে কাজ হয় না। আধুনিকতা ও অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে মানুষ হাটে এসে পিড়িঁতে বসে চুল-দাড়ি কাটতে চান না। নরসুন্দর শাহ আলম জানান, তারা এখন মাত্র ১৫ টাকায় চুল-দাড়ি কাটেন। তবুও আগের মতো আয় রোজগার হয় না।
হরিচরনলস্কর গ্রামের নরসুন্দর ধরনী শিল জানান, তিনি অন্তত ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন হাট বাজারে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে নরসুন্দরের কাজ করছেন। শুরুতে এক টাকায় চুল আর ২৫ পয়সায় দাড়ি গোঁফ কাটতেন। তখনই ভালো আয় রোজগার হতো, এখন বাজার মূল্য বাড়লেও সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে বাড়ী ফিরেন রোজগার ভাল হয় না। বংশপরম্পরায় বহু বছরের বাপ-দাদার পেশাটাও ছাড়তে পারছেন না।
নরসুন্দর রনজিৎ জানান, গ্রামগঞ্জে কাজ করলে সকল বয়সের প্রিয় মানুষের দেখা মিলে যা এই বৃদ্ধ বয়সে মনের প্রশান্তি জোগায়। বয়স হয়েছে অন্য পেশায় যাওয়ার কোন উপায় নাই। টাকার অভাবে ভাল একটি সেলুনের দোকান দিতেও পারছেন না। তিনি খুরকাচি ব্যাগে নিয়ে ঘুরে বেড়ান প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
তাদের দুঃখ কষ্টের কথা যেন কেউ শুনেন না। তারা বলেন, আয় কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে দিনদিন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন অনেকেই। এ পেশাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি ভাবে উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিজ্ঞ মহল।
এমআর
No comments:
Post a Comment