Wednesday, June 26, 2024

কাউনিয়ায় নামের মিলে নিরাপরাধ নারী গ্রেফতার


নিজস্ব প্রতিবেদক 
রংপুরের কাউনিয়ায় এনজিরও ঋণখেলাপী মামলায় এক নারী আসামীর পরিবর্তে নিরাপরাধ এক নারীকে গ্রেফতার  করেছে পুলিশ। মামলার অভিযুক্ত আসামীর নাম-ঠিকানা যাচাই না করে নিরাপরাধ এক নারীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় কাউনিয়া থানার এসআই রবিউল ইসলাম।

ভুক্তভোগী ওই নারী উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পূর্বচান্দঘাট গ্রামের আজিজুল ইসলামের মেয়ে শারমীন আক্তার (৪০) যার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার- ১৯১৪৮৬৯৭৬১। স্বামী সেকেন্দার আলী।

শারমীন আক্তার জানায়, গত ২২ জুন (শনিবার) পরিবারের লোকজন নিয়ে বেইলীব্রিজ বাজার আসেন। বিকেলে হঠাৎ করে কাউনিয়া থানা পুলিশের একটি দল তাকে ঘিরে ফেলে। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তিনি আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশ তাকে জানায় তার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপী মামলার পরোয়ানা আছে।

শারমীন আক্তার বলেন, তিনি আজ পর্যন্ত কোথাও কোন এনজিওতে ঋণ গ্রহণ করেননি। তার নামে ঋণখেলাপী মামলা থাকতে পারে না বলার পরও তার কোন কথা কর্নপাত করেনি পুলিশ। এমনকি স্বজনদের সাথে কথাও বলতে দেওয়া হয়নি তাকে। অথচ পুলিশ হয়রানি করাতে তাকে বিনা অপরাধে লোকসমাগম থেকে গ্রেফতার করে রাতভর দুধের বাচ্চাসহ থানায় আটকে রেখে পরদিন আদালতে সোর্পদ করে। পরে তিনি মামলার আসল নারীর নামে সহি করে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন।

তিনি আরও জানান, তার বাড়ী পুর্বচান্দঘাট গ্রামে আর মামলার মুল আসামীর বাড়ী শিবু বাগবাড়ি এলাকায়। মুল আসামীর পিতা-মাতার নামের সাথেও তাদের নাম ঠিকানার মিল নাই। তিনি ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান।

এদিকে মামলা সুত্রে জানা গেছে, টিএমএসএস এনজিও অন্নদানগর শাখা থেকে কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের শিবু বাগবাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মমতাজ বেগম (যার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার- ৮৫১৭৩২৮৩৫১১০৫) ২০২১ সালে লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেয়।

তিনি ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২২ সালের এপ্রিলে মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পীরগাছা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করে টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ। মমতাজ বেগম হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন আদালত।

কিন্তু কাউনিয়া থানা পুলিশের এসআই মামলার প্রকৃত আসামী মমতাজকে গ্রেফতার না করে শারমীন আক্তারকে আটক করে। পরে এনজিও ঋণখেলাপী মামলায় শারমীন আক্তারকে মমতাজ বেগম সাজিয়ে তাকে আদালতে সোর্পদ করে কাউনিয়া থানার এসআই রবিউল ইসলাম।

ব্যাপারে এসআই রবিউল ইসলামের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই নারী মমতাজ নামে এলাকায় পরিচিত। জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মমতাজ নাম ঠিক আছে বলে জানান। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম ঠিকানা মুল আসামীর নাম ঠিকানার সাথে গড়মিল রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করায় যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

কাউনিয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান বলেন, ওই নারীর সাথে তো পুলিশের কোন শত্রুতা নাই। মমতাজের বিরুদ্ধে আদালত পরোয়ানা জারী করেন। তাকে আটকের পর তার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই নারী দেখাতে পারে নাই। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালত থেকে ওই নারী জামিনে এসেছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

এমআর

 

No comments:

Post a Comment