নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং আগামি শুষ্ক মৌসুমেই প্রকল্পের কাজ শুরু করার ৬ দফা দাবিতে তিস্তা মহা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (০৬ জুলাই) দুপুর ২টায় তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ আয়োজনে তিস্তা রেলসেতু এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা, কাউনিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ যানবাহনে করে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে তিস্তা রেলসেতু এলাকায় এসে দলে-দলে সমবেত হয়। পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশ উদ্বোধন করেন- রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী, পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল মাহমুদ মিলন, কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশনারা বেগমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণসহ ক্ষতিগ্রস্ত নদীপাড়ের মানুষরা।
বক্তারা বলেন, চীন-ভারত বুঝিনা নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। চীন থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন সুখবরের আশা করছেন তিস্তা নদীভাঙ্গন কবলিত সাধারণ মানুষ। সমাবেশের শুরুতে বিশেষ আকর্ষন লাঠি খেলা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
(১) তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন, তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ। (২) তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপ-শাখাগুলোর সঙ্গে নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল পুনরায় চালু। (৩) ভূমিদস্যুদের হাত থেকে অবৈধভাবে দখলকৃত তিস্তাসহ তিস্তার শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়ে ওঠা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। (৪) তিস্তা ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থসংরক্ষণ। নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ নদী ভাঙনে উদ্বাস্ত মানুষের পুনর্বাসন। (৫) তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও তিস্তা তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থসুরক্ষায় কৃষক সমবায় এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা। (৬) মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তাপাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
চীন-ভারত বুঝিনা নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তিস্তা মহা-সমাবেশ করেছে নদী বাঁচাও, তিস্তা বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।
এমআর
No comments:
Post a Comment