Wednesday, September 4, 2024

কাউনিয়ায় স্ত্রী সন্তানের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া বৃদ্ধ ; ঝুপড়ি ঘরে বসবাস


নিজস্ব প্রতিবেদক 
রংপুরের কাউনিয়ায় এক বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে নিষ্ঠুর সন্তানেরা। ওই বৃদ্ধ এখন পরের জমিতে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। খাচ্ছেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। এভাবেই গত একমাস ধরে ওই বৃদ্ধ বাবা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ঘটনাটি উপজেলার ৩নং কূর্শা ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামে ঘটেছে। হতভাগা ওই বৃদ্ধ বাবা হচ্ছেন দেলোয়ার হোসেন (৬৫) তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সমাজের কাছে বিচার চেয়ে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কাউনিয়া উপজেলার ৩নং কূর্শা ইউনিয়নের পূর্বচাঁনঘাট বুড়িঢোবা গ্রামের বৃদ্ধ দেলোয়ার হোসেন বহুদিন ধরে শশুড়লায়ে থাকেন, দিনে দিনে শ্রম মেহনত করে দরিদ্র সংসার পরিবর্তন করে সচ্ছলতা ফিরে আনেন। দাম্পত্য জীবনে তিন সন্তানের জনক হয়ে তিনি মেহনত করে ছোট্ট ছেলে নাজমুলকে বিদেশে পাঠান, ফিরে আসে দরিদ্র সংসারের স্বচ্ছলতা।

কিন্তু সুখ ভোগের আগেই তার কপালে নেমে আসে কিডনী জনিত রোগসহ শারীরিক নানা অসুস্থতা। আর অসুস্থতার কারণে ধীরে ধীরে স্বীয় স্ত্রী মজিরন, দুই ছেলে মজমুল নাজমুল, শ্যালক আবু বক্কর, আজিজুল, আবুল হোসেন এবং ছেলের স্ত্রী সাহিদার কাছে হয়ে উঠেন অবহেলিত। বয়সের ভাঁড়ে তেমন কোন কাজকর্মও করতে না পারায় তার জীবনে নেমে আসে নির্মম নির্যাতন।

একপর্যায়ে জানতে পারেন তিনি সংসারের জমি বন্ধক বাবদ এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা তার মেয়ের ৪৬ হাজার টাকা তার অবর্তমানে উপরোক্ত অভিযোগকারীরা অতি কৌশলে তার কাছ থেকে আদায় করে নেয়। এরই প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি সন্তানদের কাছে হয়ে উঠেন বৈরী। এসব সহ্য করতে না পেরে তিনি নিজের অটোরিক্সা বিক্রি করে চলে যান তাবলিক জামায়েতে, সেখান থেকে তিনি ২৪/০৭/২০২২ইং তারিখে বাড়িতে ফিরেন। শেষমেষ বৃদ্ধ বয়সে বাড়ি ছাড়তে হয় তাকে।

এদিকে দেলোয়ার হোসেন প্রশাসনের কাছে বিচার চাওয়ায় বিগত ২৪/১০/২০২২ইং তারিখে স্থানীয় বরুয়াহাটে চা দোকান থেকে তাকে টেনে হিচড়ে বাহির করে হত্যার উদ্দ্যেশে গলা চেপে ধরে। ঘটনাটি দিনদুপুরে হওয়ায় অনেকেই দেখেছেন, কিন্তু তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে কূর্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি উভয়পক্ষকে ডেকে সমাধান করবেন। এতেও সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কূর্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে শালিসের জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগীর স্ত্রী আপোষ চাইছেন না, প্রয়োজন হলে তিনি তার স্বামীকে ডির্ভোস দিবেন কিন্তু কোন আপোষে যাবেন না।

এলাকাবাসী সুশিল সমাজ বলছেন, দেলোয়ার হোসেনের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুত সমাধান করতে হবে এবং এরকম সামাজিক অবক্ষয় রোধে সমাজগত প্রশাসনিক ভাবে প্রচার প্রচারণা যথাযত আইনের প্রয়োগ করতে হবে।

এমআর

No comments:

Post a Comment